অরবিসের অত্যাধুনিক উড়ন্ত হাসপাতাল পঞ্চমবারের মতো বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে আসবে। এ লক্ষ্যে নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ‘অরবিস ইন্টারন্যাশনাল’ কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে উড়ন্ত হাসপাতালটি এ জনপদের জটিল কিছু রোগীকে চিকিৎসাসেবা, চক্ষু চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছেন অরবিস কর্মকর্তারা। গেল ১৭ অক্টোবর বেলা ১১টায় আয়োজিত সভায় চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের বহুমূখী সেবা সম্পর্কে প্রেজেন্টেশন দেয়া হয়। এছাড়া অরবিসের কর্মকর্তারা উড়ন্ত হাসপাতালের আগমনের বিষয়ে বিস্তারিত ব্যখ্যা করেন।
সভায় চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, গরীব রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার মাধ্যমে অন্ধত্ব নিবারণ ও দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষে ১৯৭৩ সালে অতি ক্ষুদ্র পরিসরে গ্রামমূখী চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের মাধ্যমে চক্ষু হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। দেশের জনগণ, বাংলাদেশ সরকার এবং দেশী-বিদেশী কিছু দাতা সংস্থার আর্থিক সহায়তা এটিকে স¤প্রসারিত করতে সাহায্য করে। অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শুধু উড়ন্ত হাসপাতাল নয় অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ২০০১ সালে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে শিশুদের চক্ষু চিকিৎসা বিভাগ চালুর পর অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা শিশুদেরও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রয়েছে।
সভায় শিশুর অন্ধত্ব নিবারণ, দক্ষ মানবশক্তি তৈরিতে চক্ষু হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অরবিসকে ধন্যবাদ জানিয়ে আন্তর্জাতিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, উড়ন্ত হাসপাতাল চক্ষু চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। উড়ন্ত হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চক্ষু চিকিৎসকরা ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি হিসেবে বাংলাদেশের চক্ষু চিকিৎসকদের তত্ত¡ ও ব্যবহারিক উভয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহায়তা ছাড়া আমরা আমাদের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারতাম না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অরবিস ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. রাজীব হোসেন, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান ওসমানী, অরবিস ফ্লায়িং আই হসপিটাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারিয়াম আলতুন প্যারেন্ট, স্টাফ নার্স জ্যাকুলিন নিউটন, সিনিয়র ম্যানেজার (এডভান্সড লজিস্টিকস) আরনেস্টো মরেনো, স্টাফ অপথালমোলজিস্ট মোহাম্মাদ আল আবেদ, অরবিস ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েট ডিরেক্টর ডা. লুৎফুল হোসেন, এসোসিয়েট ডিরেক্টর ইকবাল হোসেন, প্রোগ্রাম ম্যানেজার পারভেজ হোসেন, কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট সাহস মোস্তাফিজ, লজিস্টিকস অফিসার মাসুদ রানা প্রমূখ। অরবিস ইন্টারন্যাশনাল কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ বলেন, ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল আরও চারবার উড়ন্ত হাসপাতাল প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করেছে। এতে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে চক্ষু বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেছেন।
এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মূলত চক্ষুবিষয়ক সর্বশেষ চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ প্রচলিত ব্যবস্থার উন্নত সংস্করনের সাথে চক্ষু চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান। এর আগে ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. রাজীব হোসেনের সাথে অরবিসের কর্মকর্তারা হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে অরবিস কর্মকর্তারা চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালকে মানবতার সেবায় উৎসর্গকৃত চমৎকার স্থান বলে মন্তব্য করেন।